শবে কদর নামাজের নিয়ত ও পড়ার নিয়ম
শবে কদর বা লাইলাতুল কদর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত মহিমান্বিত একটি রাত। ইসলাম ধর্মে এই কদরের রাতকে মহান আল্লাহ্ অনন্য মর্যাদা দান করেছেন। পবিত্র কোরআন ও একাধিক হাদিস থেকে প্রতীয়মান হয় যে, এ রাতে কোরআনে কারিম নাজিল হয়েছে বলে এ রাত হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। এই রাতে আল্লাহর অশেষ রহমত ও নিয়ামত বর্ষিত হয়।
মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি কোরআনকে কদরের রাতে নাজিল করেছি। তুমি কি জানো, কদরের রাত কি? কদরের রাত হাজার মাস হতে উত্তম-কল্যাণময়’ (সূরা আল কদর : ১-৩)।
এই শবে কদরের মহিমান্বিত রাতে ধর্মপ্রান মুসলমানরা নিজের কৃত গুনাহর জন্য মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে থাকেন। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য সারা রাত নফল নামাজ, কোরআন ও জিকির, করে থাকেন।
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) বলেছেন, ‘লাইলাতুল কদরে যে ব্যক্তি ঈমান ও সওয়াবের নিয়তে কিয়াম করবে, তার পূর্বের সকল পাপ মোচন করা হবে। (সহিহ মুসলিম: হাদিস নং- ৭৬০; সহিহ বোখারি: হাদিস নং- ২০১৪)
শবে কদর নামাজের নিয়ত
“নাওয়াইতু আন্ উছাল্লিয়া লিল্লাহি তা’য়ালা রাকআতাই সালাতিল লাইলাতিল কাদ্রি নফ্লে মুতাওয়াজ্জিহান ইলা জিহাতিল কা’বাতিশ শারীফাতি- আল্লাহু আকবর।”
অর্থ: আমি কাবামুখী হয়ে আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য শবেকদরের দুই রাকাত নফল নামাজ পড়ার নিয়ত করলাম- আল্লাহু আকবর।
শবে কদরের নামাজ পড়ার নিয়ম
শবে কদরের নামাজ দুই রাকাত করে যত ইচ্ছা নফল নামাজ পড়া যায়। এই নামাজের প্রত্যেক রাকাতে সূরা ফাতিহার পর একবার সূরা কদর অথবা তিনবার সূরা ইখ্লাস পড়তে হয়। এছারাও সুরা ফাতিহার সাথে অন্য যেকোন সুরা মিলিয়ে পড়া যায়। এই রাতে কোরআন তেলাওয়াত করবেন। বেশি বেশি দোয়া-ইস্তেগফার পড়বেন। তওবা করবেন।
শবে কদরের দোয়া
হজরত আয়েশা সিদ্দিকা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে জানতে চাইলেন যে, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ, শবে কদরের রাতে আমার কোন দোয়াটি পড়ব ?’ তখন তিনি তাকে পড়ার জন্য নির্দেশ দিলেন যে,
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ
উচ্চারণ: ‘আল্লা-হুম্মা ইন্নাকা আফুউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী’
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করাটা আপনার পছন্দ। অতএব আমাকে ক্ষমা করে দিন।
হযরত মুহাম্মাদ (স.) কদরের রাতে ইবাদত ও নামাজ আদায়ের নির্দেশ দিয়েছেন। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (স.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের আশায় কদরের রজনীতে ইবাদতের মধ্যে রাত জাগবে, পুর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে’ (সহিহ বুখারি: ৩৫)।